"আর এক-রকমের প্রথা আছে- নানকার প্রথা।" -নানকার প্রজাদের অবস্থা কেমন ছিল? পরে তাদের অবস্থার কী পরিবর্তন হয়েছিল?
নানকার প্রজাদের অবস্থা : লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় 'ছাতির বদলে হাতি' রচনায় গারাে পাহাড় ও পাহাড়তলির প্রজাদের দুরবস্থার বর্ণনা প্রসঙ্গে নানকার প্রজাদের কথা পৃথকভাবে আলােচনা করেছেন। জমিদার বা তালুকদারের যেসব প্রজা স্বত্বহীনভাবে চাষজমি ভােগ করত, তারাই ছিল নানকার প্রজা। অন্য প্রজাদের তুলনায় নানকার প্রজাদের অবস্থা ছিল আরও দুর্বিষহ। জমির ফসল বা আম কাঠালে তাদের কোনাে অধিকার ছিল না। জমি জরিপ করার পর তাদের প্রত্যেকের জন্য আড়াই টাকা পর্যন্ত রাজস্ব ধার্য হত। সেই খাজনা দিতে না পারলে তহশিলদার নানকার প্রজাকে কাছারিতে নিয়ে গিয়ে পিছমােড়া করে বেঁধে মারধর করত এবং গুদামঘরে আটকে রাখত। তারপর নিলাম ডেকে সেই প্রজার সমস্ত সম্পত্তি খাসদখল করতেন জমিদার বা তালুকদার। মহাজন প্রজাদের কাছ থেকে ধার বাবদ এক মনের জন্য দ্বিগুণ পরিমাণ ধান আদায় করতেন।
অবস্থার পরিবর্তন : গারাে পাহাড়ের নানকার-সহ সমগ্র প্রজা পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট পার্টির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জেগে ওঠে। এর ফলস্বরূপ তারা তখন জমিদার-মহাজন-পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সােচ্চার হয়। ক্রমশ প্রজারা তাদের অধিকার এবং সম্মান আদায় করতে বিশেষভাবে সক্ষম হয়। পুলিশ বা তথাকথিত ভদ্রলােকরা আর তাই তাদের অসম্মান বা শ্রদ্ধা করতে পারেন না।
comment 0 Comments
more_vert